গ্রামীণ ব্যাংকের ৬টি সুযোগ সুবিধা-গ্রামীণ ব্যাংকের পেনশন হিসাব
গ্রামীণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা ও লোন পদ্ধতি সম্পর্কে অনেকেই অবগত না। কিন্তু গ্রামীণ ব্যাংকের সুবিধা ব্যাপক। তাছাড়াও লোন পদ্ধতি একটু জটিল প্রক্রিয়া হওয়ার কারণে অনেকেই গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারে না। তার সাথে আরো জানবো গ্রামীণ ব্যাংক যে ধরনের লোন দেয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত।
গ্রামীণ ব্যাংক হল এক ধরনের ক্ষুদ্র ঋণ দাতাকারি সামাজিক সংস্থা। অনেকেই আবার গ্রামীণ ব্যাংকে বলে থাকে সামাজিক ব্যাংক। চলুন তাহলে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনে নেই কিভাবে আপনি গ্রামীণ ব্যাংক থেকে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা পাবেন এবং লোন পাবেন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ গ্রামীণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা ও লোন পদ্ধতি
- গ্রামীণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা
- গ্রামীণ ব্যাংক যে ধরনের লোন দেয়
- গ্রামীণ ব্যাংকের সুদের হার কত
- গ্রামীণ ব্যাংক থেকে লোন পেতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- গ্রামীণ ব্যাংক কি এবং গ্রামীণ ব্যাংক কি সরকারি
- গ্রামীণ ব্যাংকে মাঠ কর্মীদের বেতন কত
- গ্রামীণ ব্যাংকের পেনশন হিসাব
- গ্রামীণ ব্যাংক সম্পর্কে সাধারণ জিজ্ঞাসা(FAQ)
- লেখকের শেষ বক্তব্যঃ গ্রামীণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা ও লোন পদ্ধতি সম্পর্কে
গ্রামীণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা
গ্রামীণ ব্যাংক যেহেতু এক ধরনের ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানকারী সামাজিক ব্যাংক। সেজন্য এই ব্যাংক থেকে অনেক ধরনের সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করা যায়। গ্রামীণ ব্যাংক থেকে আপনি খুব সহজেই ঋণ নিতে পারবেন এবং সেগুলো একটি নির্দিষ্ট সময়ে বা কিস্তি হিসেবে আপনাকে পরিশোধ করতে হবে। তাছাড়াও গ্রামীণ ব্যাংক থেকে আপনি যে লোন উত্তোলন করবেন সেই লোনের সুদের হার থাকে খুবই কম। চলুন তাহলে গ্রামীণ ব্যাংকের সুযোগ এবং সুবিধা সম্পর্কে একটু ধারণা নেওয়া যাকঃ
বেতনের সুবিধাঃ আপনি যদি গ্রামীণ ব্যাংকে একজন কর্মচারী হয়ে থাকেন তাহলে আপনি বেতনের সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে গ্রামীণ ব্যাংকের এক ধরনের গ্রেট সিস্টেম চালু থাকে। এক্ষেত্রে আপনি যদি আপনার পারফরমেন্সের মাধ্যমে গ্রেট সিস্টেমের উন্নতি করতে পারেন। তাহলে আপনার পদোন্নতি হতে পারে এবং আপনার বেতন বাড়তে পারে।
ঋণের সুবিধাঃ খুব সহজে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে লোন উত্তোলন করা সম্ভব। শিক্ষা লোন আপনি চাইলেই গ্রামীণ ব্যাংক থেকে উত্তোলন করতে পারবেন। আপনার উত্তোলন করা লোনের সুদের হার হবে খুবই কম। তাছাড়াও আপনি গ্রামীণ ব্যাংক থেকে যে লোন নিবেন সেই লোন মাসিক বা সাপ্তাহিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে পারবেন।
বোনাস সুবিধাঃ আপনি যদি গ্রামীণ ব্যাংকের একজন কর্মচারী হয়ে থাকেন। তাহলে আপনি মাসে একটা ভালো পরিসরে বেতন পাবেন। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের বোনাস বছরে তিন থেকে চারবার পেয়ে যাবেন।
শিক্ষা ঋণ এবং কৃষি ঋণের সুবিধাঃ গ্রামীণ ব্যাংক থেকে আপনি যদি শিক্ষা ঋণ এবং কৃষি ঋণ নিয়ে থাকেন তাহলে অনেক ধরনের সুযোগ সুবিধা পাবেন। এক্ষেত্রে আপনি যদি শিক্ষা ঋণ নিয়ে থাকেন। তাহলে শিক্ষার্থীর পড়াশোনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আপনাকে সেই ঋণ পরিশোধ করতে হবে না। তা ছাড়াও কৃষকের জন্য বিভিন্ন ধরনের কৃষি ঋণ দিয়ে থাকে গ্রামীন ব্যাংক।
চাকরির সুযোগ সুবিধাঃ আপনি যদি গ্রামীণ ব্যাংকে চাকরি করে থাকেন তাহলে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা আপনি পেয়ে যাবেন। এক্ষেত্রে আপনি যদি গ্রামীণ ব্যাংকে চাকরি করেন তাহলে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে চাকরি করা অবস্থায় দোকান বা ব্যবসা করার জন্য টাকা ঋণ করতে পারবেন। অন্যদিকে আপনার বেতন সুবিধা, বোনাস, যাতায়াত খরচ, ফোনের বিল এবং পেনশনের সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকেন গ্রামীণ ব্যাংক।
চাকরি স্থায়িত্বকাল এবং সুদের হার কমঃ আপনি যদি গ্রামীণ ব্যাংকে চাকরি করে থাকেন তাহলে আপনার চাকরিচ্যুত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তাছাড়াও গ্রামীণ ব্যাংকে আপনি যে লোন নিয়ে থাকবেন সেই লোনের সুদের হার অনেকাংশেই কম।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটাই বলা যায় যে, গ্রামীণ ব্যাংকে থেকে লোন উত্তোলন করলে সেটা আপনি বিভিন্ন সময়ে কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধ করতে পারবেন। তাছাড়াও গ্রামীণ ব্যাংক থেকে শিক্ষা লোন এবং কৃষি লোন খুব সহজেই উত্তোলন করতে পারবেন। উত্তোলনকৃত লোনের সুদের হার অনেকাংশেই কম।
গ্রামীণ ব্যাংক যে ধরনের লোন দেয়
গ্রামীণ ব্যাংক বাংলাদেশ বিভিন্ন ধরনের ঋণ প্রদান করে থাকেন। তবে অনেকের মনে প্রশ্ন থেকে যায় যে, গ্রামীণ ব্যাংক কোন বা কি ধরনের লোন দিয়ে থাকেন। অনেক ক্ষেত্রে গ্রামীণ ব্যাংক বিভিন্ন স্তরে মানুষের বিভিন্ন ধরনের অথবা তাদের মাসিক ইনকাম দেখে বিভিন্ন ধরনের লোন প্রদান করে থাকেন। চলুন তাহলে আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনে নেই গ্রামীণ ব্যাংক কোন ধরনের লোন প্রদান করে থাকেনঃ
কৃষি ঋণঃ বাংলাদেশ হলো কৃষি নির্ভরশীল একটি দেশ। তাছাড়াও বাংলাদেশ প্রান্ত অঞ্চলে কৃষকের জন্য বা কৃষকের সুযোগ সুবিধার জন্য গ্রামীণ ব্যাংক এক ধরনের কৃষি লোন পরিসেবা চালু করেছে। কৃষকরা ইচ্ছে করলেই গ্রামীণ ব্যাংক থেকে কৃষি কাজের জন্য লোন উত্তোলন করতে পারবেন। যে সকল কাজের জন্য একজন কৃষক কৃষি লোন উত্তোলন করতে পারবেন সেগুলো হলোঃ
- কৃষিকাজের যন্ত্রপাতি ক্রয় করার জন্য
- জমিতে সার, কীটনাশক এবং বীজ রোপন করার জন্য
- কৃষিকাজের জমি চুক্তি অথবা বর্গাতে নেওয়ার জন্য
- মাছ চাষ, পশু লালন পালন এবং কৃষি কাজের সাথে সম্পৃক্ত আরো বিভিন্ন ব্যবসার জন্য
ক্ষুদ্রঋণঃ বাংলাদেশ বিভিন্ন স্তরের মানুষ বসবাস করে। এই বিভিন্ন স্তরে মানুষের কথা চিন্তা করে গ্রামীণ ব্যাংক এক ধরনের ক্ষুদ্রঋণ পরিষেবা চালু করেছে। যে ঋণ পরিষেবা থেকে খুব সহজেই যে কেউ এই লোন উত্তোলন করতে পারবে। এক্ষেত্রে উত্তোলনকৃত লোন আপনাকে সাপ্তাহিক কিস্তিতে অল্প অল্প করে পরিশোধ করতে হবে।
আপনি যত টাকা লোন নিবেন আপনার টাকার উপর নির্ভর করে সপ্তাহে একদিন আপনার কাছ থেকে কিস্তি হিসেবে টাকা নিয়ে আসবে গ্রামীণ ব্যাংকে নিয়োগকৃত কর্মচারী। বাংলাদেশের প্রায় সব ইউনিয়ন পরিষদে গ্রামীণ ব্যাংকের শাখা রয়েছে। আপনি ইচ্ছে করলেই সেই শাখায় যোগাযোগ করে ৫০০০ হাজার থেকে ৫০০০০ হাজার টাকা লোন নিতে পারবেন।
তবে অবশ্যই একটা বিষয় আপনাকে মনে রাখতে হবে যে, গ্রামীণ ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন বা লোন নেওয়ার জন্য আপনাকে কিছু শর্ত বা নিয়ম মেনে টাকা উত্তোলন করতে হবে।
পশু লালন-পালন ঋণঃ বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ হলেও বাংলাদেশের কৃষকরা পশু লালন পালন করে থাকেন। কৃষকদের পশু পালনের জন্য গ্রামীণ ব্যাংক এক ধরনের পশু সম্পদ ঋণ পরিসেবা চালু করেছে। কৃষকরা গরু পালন, হাঁস মুরগি পালন এবং ছাগল-ভেড়া লালন পালন করার জন্য এক ধরনের লোন গ্রামীণ ব্যাংকের আওতায় চালু রয়েছে।
তবে একটি বিষয় আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে, আপনি যদি গ্রামীণ ব্যাংক থেকে পশু লালন পালনের জন্য ঋণ গ্রহণ করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার পশু লালন পালন সম্পর্কে অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তাছাড়াও কমপক্ষে আপনার বয়স ১৮ বছরের উপরে হতে হবে। তাহলে আপনি গ্রামীণ ব্যাংক থেকে এই লোন উত্তোলনের আওতায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন।
উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য ঋণ বা উদ্যোক্তা ঋণঃ আপনি যদি একজন উদ্যোক্তা হতে চান তাহলে অবশ্যই আপনি গ্রামীণ ব্যাংক থেকে উদ্যোক্তার ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন। তবে আপনি যদি উদ্যোক্তা ঋণের আওতাভুক্ত হতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ১৮ বছরের উপরে হতে হবে। প্রথমে আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য যদি আপনার কাছে সেরকম মূলধন না থেকে থাকে।
তাহলে অবশ্যই আপনি একজন উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য গ্রামীণ ব্যাংক থেকে লোন উত্তোলন করতে পারবেন। উদ্যোক্ত হওয়ার জন্য গ্রামীণ ব্যাংক যে সকল কাজের জন্য লোন প্রদান করে থাকেন সেগুলো হলোঃ
- ব্যবসা বা দোকান দেওয়ার জন্য
- ব্যবসা করার জন্য পণ্য ক্রয় বা দোকানের জন্য পণ্য কেনার জন্য
- বিভিন্ন ধরনের কারখানা দেওয়া অথবা সেই কারখানা থেকে পণ্য উৎপাদনের জন্য
- কারখানার বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি বা সরঞ্জাম ক্রয় করার জন্য
- আপনার ব্যবসার প্রচার এবং কর্মচারী নিয়োগের জন্য
বসতবাড়ি তৈরির জন্য ঋণ বা হাউজিং লোনঃ ১৯৮৪ সাল থেকেই গ্রামীণ ব্যাংক যাদের বসতবাড়ি বা থাকার জন্য বাড়ি নেই। তাদের বাড়ি তৈরি করার জন্য হাউজিং লোন সিস্টেম গ্রামীণ ব্যাংকে আওতাভুক্ত করেছে। যাদের থাকার জন্য বাড়ি নেই সেই বাড়ি যদি আপনি টিনশেট তৈরি করতে চান। তাহলে সর্বোচ্চ গ্রামীণ ব্যাংক থেকে প্রায় পঞ্চাশ থেকে ষাট হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন। সেই ঋণ আপনাকে সাপ্তাহিক কিস্তি হিসাবে পরিশোধ করতে হবে এবং পরিশোধের সময়সীমা নির্ধারণ করা থাকে।
পড়াশোনার জন্য লোন বা শিক্ষা ঋণঃ মানুষের মৌলিক চাহিদার মধ্যে শিক্ষা অন্যতম। যেহেতু শিক্ষা জাতির মূল মেরুদন্ড। তাই সবার জন্য শিক্ষা গ্রহণ এই বিষয়টার উপর লক্ষ্য রেখে গ্রামীণ ব্যাংক তাদের ঋণের আওতায় শিক্ষা ঋণ অন্তর্ভুক্ত করেছে। এক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থীকে শিক্ষারের জন্য লোন নিতে হলে অবশ্যই সেই শিক্ষার্থীর পিতা-মাতাকে গ্রামীণ ব্যাংকে প্রায় এক বছরে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে।
তাহলে সেই শিক্ষার্থী পড়াশুনা করার জন্য গ্রামীণ ব্যাংক থেকে এক ধরনের লোন উত্তোলন করতে পারবেন। তবে অবশ্যই শিক্ষার্থীর বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হতে হবে। যে সকল শিক্ষার্থীদের গ্রামীণ ব্যাংক লোন প্রদান করে থাকেন সেগুলো হলঃ
- মেডিকেল শিক্ষার্থী অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী
- ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের জন্য
- যে সকল শিক্ষার্থী এমএ ও এমবিএ করতেছে তাদের জন্য
- গ্রামীণ ব্যাংক কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য শিক্ষা ঋণ প্রদান করে থাকে।
এ সকল শিক্ষার্থী ইচ্ছা করলেই গ্রামীণ ব্যাংক থেকে পড়াশোনা করার জন্য শিক্ষা লোন উত্তোলন করতে পারে। তাছাড়া এ সকল শিক্ষার্থী এই সকল লোন যতদিন পড়াশোনা করে ততদিন পরিশোধ করার প্রয়োজন পড়ে না। প্রিয় পাঠক আশা করি,গ্রামীণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা ও লোন পদ্ধতি সম্পর্কে যথেষ্ট পরিমাণে ধারণা পেয়েছেন।
গ্রামীণ ব্যাংকের সুদের হার কত
উপরোক্ত আলোচনায় গ্রামীণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা ও লোন পদ্ধতি সম্পর্কে জানলাম।আপনি যদি গ্রামীণ ব্যাংক থেকে লোন উত্তোলন করে থাকেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে সেই লোনের কত পার্সেন্ট আপনাকে সুদ প্রদান করতে হবে। আপনি যেহেতু সাপ্তাহিক কিস্তি হিসেবে সেই লোন পরিশোধ করবেন। সেহেতু আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে আপনার লোনের সুদের হার কত।
এই আর্টিকেলের মাধ্যমে গ্রামীণ ব্যাংকের সুদের হার কত সেই সম্পর্কে জানতে পারবেন। গ্রামীণ ব্যাংক যেহেতু বিভিন্ন ধরনের ঋণ প্রদান করে থাকেন সেহেতু সেই লোন প্রদান করার জন্য তারা কিছু % সুদের হার আপনাকে দিতে হবে। গ্রামীণ ব্যাংক বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের ঋণ গ্রহীতাদের কাছ থেকে ৬% থেকে ৮% সুদের হার নিয়ে থাকেন। অন্যদিকে আপনি যদি গ্রামীণ ব্যাংক থেকে মুনাফা গ্রহণ করতে চান তাহলে ৬% থেকে ৮% দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় গ্রামীণ ব্যাংকে সুদের হার খুবই কম।
গ্রামীণ ব্যাংক থেকে লোন পেতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
গ্রামীণ ব্যাংক থেকে যদি লোন উত্তোলন করতে চান তাহলে আপনার কিছু কাগজপত্রের বা ডকুমেন্টের প্রয়োজন পড়বে। আপনি যদি না জেনে থাকেন গ্রামীণ ব্যাংক থেকে লোন পেতে হলে কি কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়। তাহলে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে খুব সহজে জানতে পারবেন। গ্রামীণ ব্যাংক থেকে লোন পেতে হলে আপনার যে সকল প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট প্রয়োজন তার নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
- যে সকল ব্যক্তি লোনের জন্য আবেদন করবেন সেই সকল ব্যক্তির জাতীয় পরিচয় পত্র প্রয়োজন পড়বে। এক্ষেত্রে বিবাহিত হলে অবশ্যই স্বামী এবং স্ত্রী দুজনেরই জাতীয় পরিচয় পত্রের প্রয়োজন পড়বে।তাছাড়াও পাসপোর্ট সাইজের ছবি প্রয়োজন পড়বে।
- শিক্ষার্থীদের লোন ব্যতীত অন্য যে সকল লোন গ্রামীণ ব্যাংকে আওতায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে সে সকল লোন উত্তোলন করতে হলে অবশ্যই লোল উত্তোলনকারীকে বিবাহিত হতে হবে।
- অবশ্যই ঋণ গ্রহীতার নিজস্ব বসতবাড়ি থাকতে হবে এবং একজন ঋণগ্রহীতা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
- গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ঋণ উত্তোলনের জন্য অবশ্যই একজন নমনীর প্রয়োজন পড়বে। এক্ষেত্রে নমনীর জাতীয় পরিচয় পত্র এবং ছবির প্রয়োজন পড়বে।
- ঋণ গ্রহিতাকে তার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চারিত্রিক সনদ এবং নাগরিকত্ব সনদ নিতে হবে এবং সেগুলো গ্রামীণ ব্যাংকের নিযুক্ত ব্যক্তির কাছে জমা দিতে হবে। অন্যদিকে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণের জন্য অবশ্যই ৫% সার্ভিস চার্জ বাবদ ফি দিতে হবে।
আর এ সকল প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট যদি আপনার কাছে থেকে থাকে তাহলে আপনি খুব সহজেই গ্রামীণ ব্যাংক থেকে যেকোনো লোনের আওতাভুক্ত হতে পারবেন। আশা করি, বুঝতে পেরেছেনগ্রামীণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা ও লোন পদ্ধতি এবং গ্রামীণ ব্যাংক যে ধরনের লোন দেয় সেই সম্পর্কে। আরো জানতে পারলেন গ্রামীণ ব্যাংকের সুদের হার কত।
গ্রামীণ ব্যাংক কি এবং গ্রামীণ ব্যাংক কি সরকারি
গ্রামীণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা ও লোন পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা থাকলেও অনেকেরই গ্রামীণ ব্যাংক সম্পর্কে একটা সুস্পষ্ট ধারণা নেই। চলুন এই আর্টিকেলের মাধ্যমে গ্রামীণ ব্যাংক কি এবং গ্রামীণ ব্যাংক কি সরকারি এই সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। গ্রামীণ ব্যাংক হল সামাজিক ব্যাংক যা বিভিন্ন স্তরের মানুষকে বিভিন্ন ধরনের ঋণ প্রদান করে থাকেন। গ্রামীণ ব্যাংক যে ধরনের লোন দেয় এবং গ্রামীণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে জানতে পারলেন। ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ব্যাংকটি সর্বস্তরে মানুষের আর্থিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
গ্রামীণ ব্যাংক কিঃ গ্রামীণ ব্যাংক হল এক ধরনের ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানকারী সংস্থা বা ব্যাংক। যে ব্যাংক থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্তরের মানুষ নিজেদের প্রয়োজনে টাকা লোন নিতে পারেন। যেই লোন বা ঋণ সাপ্তাহিক কিস্তি হিসাবে পরিশোধ করতে হয়। ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ব্যাংকটি সর্বস্তরের মানুষের প্রয়োজনে লোন প্রদান করে থাকেন।
এই ব্যাংক বা সংস্থার মূল লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নশীল জনগোষ্ঠীতে রূপান্তর করা। তাছাড়াও গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রম পরিসেবার জন্য ২০০৬ সালে শান্তি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তাছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন ধরনের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে গ্রামীণ ব্যাংক।
গ্রামীণ ব্যাংক কি সরকারিঃ অনেকের মনে এই প্রশ্ন থেকে যায় যে, গ্রামীণ ব্যাংক কি সরকারি? চলুন তাহলে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনে নেই, গ্রামীণ ব্যাংক কি সরকারি এই সম্পর্কে। গ্রামীণ ব্যাংক কি সরকারি এই প্রশ্নের উত্তরটা দেওয়া যেতে পারে এভাবে, গ্রামীণ ব্যাংক সরকারি ব্যাংক না। তবে সরকারের বিভিন্ন আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে গ্রামীণ ব্যাংক।
তাছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন স্তরে মানুষের আর্থিক উন্নয়নে কাজ করে যায় গ্রামীণ ব্যাংক। গ্রামীণ ব্যাংক তাদের নিজস্ব গতিতে পরিচালিত হয়ে থাকে। প্রিয় পাঠক আপনি হয়তো বুঝতে পেরেছেন গ্রামীণ ব্যাংক সরকারি ব্যাংক হয় কি না?
গ্রামীণ ব্যাংকে মাঠ কর্মীদের বেতন কত
অনেকেই জানে না যে, গ্রামীণ ব্যাংকে মাঠ কর্মীদের বেতন কত? চলুন তাহলে আজকে এই আর্টিকেলে জেনে নেই, গ্রামীণ ব্যাংকে মাঠ কর্মীদের কত টাকা বেতন দেওয়া হয়ে থাকে। বিভিন্ন সময় গ্রামীণ ব্যাংক তাদের বিভিন্ন শাখায় মাঠকর্মী নিয়োগ দিয়ে থাকেন। এ সকল মাঠ কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে যে সকল আবেদনকারী অংশগ্রহণ করেন তাদেরকে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে।
তবে একজন মাঠকর্মী বেতন নির্ধারণ করা হয়ে থাকে মাসিক ৯ থেকে ১১ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে আপনার পারফরম্যান্সের উপর বেতন নির্ভর করে। আপনার অভিজ্ঞতা যত বাড়বে বেতন স্কেল তত বাড়বে। তবে একজন মাঠ কর্মীদের বেতন সর্বনিম্ন ৯০০০ টাকা থেকে ২৩ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তাছাড়াও বছরে দুই থেকে তিনবার একজন মাঠকর্মী বোনাস পেয়ে থাকেন।তাছাড়া মাঠকর্মীদের বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা পেনশন,যাতায়াত ভাড়া এবং ফোনের বিল গ্রামীণ ব্যাংক দিয়ে থাকেন।
গ্রামীণ ব্যাংকের পেনশন হিসাব
সকল ধরনের চাকরি নিতে পেনশনের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে গ্রামীণ ব্যাংকও পেনশন আওতায় অন্তর্ভুক্ত। গ্রামীণ ব্যাংকে থেকে যে সকল কর্মচারী চাকরি শেষ করে তাদের নিজেদের পেনশনে হিসাব নিজেরাই বের করতে পারবেন। তবে আপনার যদি জানা না থাকে কিভাবে গ্রামীণ ব্যাংকের পেনশনের টাকার হিসাব করতে হয়।
তাহলে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনে নিতে পারবেন গ্রামীন ব্যাংকের পেনশনের হিসাব কিভাবে করতে হয়। বাংলাদেশ সকল চাকরির পেনশনের হিসাব একটা নির্দিষ্ট নিয়ম বা প্রক্রিয়া অনুসারে সম্পূর্ণ করা হয়ে থাকে। গ্রামীণ ব্যাংকও সেই প্রক্রিয়ায় পেনশনের হিসাব করে থাকে। গ্রামীণ ব্যাংকের পেনশনের হিসাব আপনি যদি নিজে থেকে বের করতে চান তাহলে এই প্রক্রিয়াটি অবলম্বন করতে পারেনঃ
গ্রামীণ ব্যাংকের পেনশন হিসাবঃ({ চাকরি মাসিক বেতন* সর্বশেষ চাকুরীর মাসিক বেতন}/২)= আপনার মোট পেনশনের টাকা।
গ্রামীণ ব্যাংক সম্পর্কে সাধারণ জিজ্ঞাসা(FAQ)
প্রশ্নঃ গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা কে?
উত্তরঃ গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা হল ডাঃ মোহাম্মদ ইউনুস।
প্রশ্নঃ গ্রামীণ ব্যাংক কত সালে নোবেল পুরস্কার পায়?
উত্তরঃ গ্রামীণ ব্যাংক এবং ডাক্তার ইউনুস যৌথভাবে ২০০৬ সালে শান্তি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
প্রশ্নঃগ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয় কত সালে?
উত্তরঃ গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৬ সালে।
প্রশ্নঃ গ্রামীণ ব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয় কত সালে?
উত্তরঃ গ্রামীণ ব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয় ১৯৮৩ সালে।
প্রশ্নঃ গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান কে?
উত্তরঃ গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান হল ডঃ একেএম সাইফুল মজিদ।
প্রশ্নঃ গ্রামীণ ব্যাংক কোন ধরনের প্রতিষ্ঠান?
উত্তরঃ গ্রামীণ ব্যাংক হল ক্ষুদ্র ঋণ প্রধান কারী সামাজিক সংস্থা।
লেখকের শেষ বক্তব্যঃ গ্রামীণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা ও লোন পদ্ধতি সম্পর্কে
গ্রামীণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা ও লোন পদ্ধতি সম্পর্কে জানলেন এবং আরও জানলেন গ্রামীণ ব্যাংক কি সরকারি। তার সাথে আরো জানলেন গ্রামীণ ব্যাংক যে ধরনের লোন দেয় সেই সম্পর্কে। প্রিয় পাঠক আশা করি, গ্রামীণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা এবং গ্রামীণ ব্যাংকের পেনশন হিসাব এ বিষয়ে আপনি জানতে পেরেছেন। একটা বিষয়ের উপর লক্ষ্য রাখতে হবে, গ্রামীণ ব্যাংকের লোন পদ্ধতি বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তন হতে পারে।
আমার পরামর্শে এটাই যে, আপনি যদি গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ঋণ বা লোন উত্তোলন করতে চান। তাহলে অবশ্যই গ্রামীণ ব্যাংকে নিযুক্ত কর্মচারী সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। অথবা আপনার আশপাশে যে গ্রামীণ ব্যাংকের শাখা আছে সেখানে যোগাযোগ করে লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। এরকম আর্টিকেল সবার আগে পেতে এই ওয়েবসাইটটি ফলো করে রাখতে পারেন। ধন্যবাদ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url