ত্রিফলার ১৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা-ত্রিফলা তৈরির নিয়ম

ত্রিফলার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। তাহলে আমাদের আর্টিকেলটি আপনি পড়তে পারেন। এখানে জানতে পারবেন ত্রিফলার উপকারী গুণগুলো এবং তার সাথে আরো জানতে পারবেন ত্রিফলা কি প্রতিদিন খাওয়া যায়।
ত্রিফলার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা১
ত্রিফলা শরীরের জন্য অনেক উপকারী। কেননা ত্রিফলা তৈরি করা হয় তিন ঔষধি ফল দিয়ে। তাছাড়াও ত্রিফলা শরীরের সুস্থতা বজায় রাখতে কাজ করে থাকে। তাই ত্রিফলা খাওয়া শরীরের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপযোগী।

পোস্ট সূচিপত্রঃ ত্রিফলার উপকারিতা ও অপকারিতা

ত্রিফলার উপকারিতা ও অপকারিতা

ত্রিফলা নামটি শুনলেই যেন মনে হয়, এটা আবার কি? ত্রিফলা হলো তিনটি ফলের মিশ্রণে তৈরি একটি ভেষজ ঔষধ যা শরীরের বিভিন্ন ধরনের অঙ্গ পতঙ্গের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করে থাকে। তবে যদি নিয়ম মেনে ত্রিফলা খাওয়া যায় তাহলে শরীরের ওজন কমানো থেকে শুরু করে দাঁতের ব্যাথা দূর করতেও সক্ষম। ত্রিফলা পেটের হজম শক্তিতে বেশি শক্তিশালী। 

আপনার যদি পেটের মধ্যে হজমের সমস্যা বা পচনের সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে সেই সমস্যা দূর করার জন্য আপনি খেতে পারেন ত্রিফলা। তাছাড়াও ত্রিফলা শরীরের রোগ আক্রমণে হাত থেকে রক্ষা করতে সক্ষম। ত্রিফলা ভেষজ ওষুধটি যে তিনটি গাছপালা বা ফল দিয়ে তৈরি করা হয় সেই তিনটি গাছপালা ও ফল শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান করে দিতে পারে। 

আমলকি, হরতকি ও বহেড়া এই তিন ফলের মিশ্রণ তৈরি হয় ত্রিফলা। আর এই তিনটি ফলে মানব দেহের অঙ্গ পতঙ্গের রোগব্যাধি সারাতে ব্যাপক সহায়ক। চলুন আজকে তাহলে জেনে নেই ত্রিফলা উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন ত্রিফলার শরীরের জন্য কতটুকু উপযোগী এবং কার্যকারী।

ত্রিফলার ১৫টি উপকারিতা

ত্রিফলার উপকারিতা ও অপকারিতা জানার আগে আপনাকে জানতে হবে ত্রিফলার উপকারিতা সম্পর্কে। কেননা ত্রিফলা তিনটি ফলের সম্বনয়ে গঠিত একটি ভেষজ ঔষধ যা মানব দেহের রোগব্যাধি দূর করতে সক্ষম। চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে জেনে নেওয়া যাক-ত্রিফলার ঔষধি গুন এবং উপকারিতা গুলোঃ

হজম শক্তি বৃদ্ধিতেঃ নিয়মমতো যদি ত্রিফলা সেবন করা যায় তাহলে পেটের হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং পেটের যাবতীয় সমস্যা সাথে মোকাবেলা করতে ত্রিফলা সক্ষম।

শরীরের ওজন কমানোর প্রয়োজনেঃ অনেক সময় নিজের অজান্তে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায়। আপনি যদি বাড়িতে বসে আপনার ওজন কমাতে চান। তাহলে অবশ্যই আপনি ত্রিফলা খেতে পারেন। কেননা ত্রিফলা ওজন কমাতে বেশ কার্যকরী।

চোখের সমস্যা দূরীকরণেঃ অনেক সময় চোখে দেখতে সমস্যা হয়। অর্থাৎ দৃষ্টি শক্তি কমে যায় আর দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে ত্রিফলা। তাছাড়াও চোখের ছানি দূর করতে সাহায্য করে ত্রিফলা।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেঃ শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ সারাতে আপনি ত্রিফলা খেতে পারেন। কেননা ত্রিফলা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সক্ষম।

পেটের যাবতীয় সমস্যাঃ অনেক সময় বিভিন্ন কারণে পেট ফুলে যায় অথবা পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যা দূর করতে আপনি ত্রিফলা খেতে পারেন।

চুলের গোড়া মজবুত করতেঃ চুলের গোড়ায় মজবুত না থাকার কারণে সময়ের আগে মাথা থেকে চুল ঝরে পড়ে যায়। আর এই চুল ঝরে পড়া রোধ করতে গেলে আপনি ত্রিফলা খেতে পারেন। কেননা ত্রিফলা চুলের গোড়া শক্ত এবং মজবুত করতে পারে।

দাঁতের সমস্যা দূর করতেঃ বিনা কারণে বা বিভিন্ন কারণে দাঁতের মাড়ি ফুলে যায় অথবা দাঁত ব্যাথা শুরু হয়। আর দাঁত ব্যথা খুবই যন্ত্রণাদায়ক। আর এই যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে আপনি ত্রিফলা খেতে পারবেন।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেঃ আপনারা যারা ডায়াবেটিস রোগী আছেন আপনাদের শরীরে সুগারের মাত্রা ঠিক রাখতে ত্রিফলার খাওয়া উত্তম।

শরীরের বাত ব্যথা দূর করতেঃ শরীরের বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন সময় হাড়ে ব্যথা দেখা দেয়। আর এই ব্যাথা দূর করতে পারে ত্রিফলা ভেষজ ওষুধটি।

রক্ত পরিশোধনেঃ রক্তে থাকা বিভিন্ন ধরনের জীবাণু দূর করতে ব্যাপক সক্ষম ত্রিফলা। তাছাড়াও ত্রিফলা রক্ত থেকে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর পদার্থ নির্গত করতে সাহায্য করে। শরীরের সকল অঙ্গ প্রতঙ্গে সঠিকভাবে রক্ত প্রবাহ করতে সাহায্য করে ত্রিফলা।

ক্ষত নিরাময়েঃ শরীরের অঙ্গ পতঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় কারণবশত ক্ষত সৃষ্টি হয়। আর এই ক্ষত দূর করতে ব্যাপক সময়ের প্রয়োজন হয়। কিন্তু ত্রিফলা খাওয়ার পর আপনার শরীরের ক্ষত দূর করতে বেশি সময়ের প্রয়োজন পড়বে না।

কিডনি ও লিভার সুস্থ রাখতেঃ এই আয়ুর্বেদিক ঔষধটি আপনার কিডনি ও লিভারের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সক্ষম।

রক্তচাপ ও প্রেসার ঠিক রাখতেঃ শরীরের উচ্চ রক্তচাপ অনেক সময় স্টোকের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।, তাই এই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখা জরুরি। আর ত্রিফলা ঔষধিটি শরীরের রক্তচাপ কমিয়ে আনতে সাহায্য করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ শরীরের ক্যান্সার কোষকোলাকে ধ্বংস করতে ত্রিফলা আয়ুর্বেদিক ঔষধটি কার্যকরী। কেননা ত্রিপলা সেবন করলে শরীরের কোষকলাকে ক্যান্সার আহত করতে পারে না।

অ্যাজমা রোগ দূর করতেঃ শরীরে থাকা অ্যাজমা দূর করতে সাহায্যকারী হিসেবে কাজ করে ত্রিফলা আয়ুর্বেদিক ঔষধ।

ত্রিফলা খাওয়ার এবং ব্যবহারের নিয়ম

আপনার শরীরের ত্রিফলার উপকারিতা ও অপকারিতা কতোটুকু হতে পারে এটা নির্ভর করে ত্রিফলা খাওয়া এবং ব্যবহারের উপর। ত্রিফলা একটি আয়ুর্বেদিক ঔষধ। তাই ত্রিফলা খাওয়ার নিয়ম জানা অবশ্যই আবশ্যক। আপনি যদি ত্রিফলা নিয়ম মেনে খেতে পারেন তাহলে তা আপনার শরীরের জন্য কার্যকরী। তাই অবশ্যই আপনাকে নিয়ম মেনে ত্রিফলা ওষুধটি সেবন করতে হবে। 
ত্রিফলার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা২
ত্রিফলা খাওয়ার আগে খেলে স্বাস্থ্যের জন্য তা বেশ উপকারী। আপনি খাবার পরও এটি সেবন করতে পারবেন। তবে অবশ্যই সেবন করার আগে সঠিক মাত্রায় এটি সেবন করা উচিত। যে রোগের জন্য আপনি ত্রিফলা আয়ুর্বেদিক ওষুধটি সেবন করতেছেন। অবশ্যই কিভাবে সেবন করলে এটা আপনার শরীরের জন্য উপকারী অভিজ্ঞ ডাক্তারের কাছে পরামর্শ নিয়ে সেই নিয়ম মেনে ত্রিফলা সেবন করবেন। 

আপনি যদি চা খেতে ভালোবাসেন তাহলে এই ওষুধটি চায়ের মতো করে খেতে পারেন। তার জন্য আপনাকে প্রথমে ত্রিফলার পাউডার এক থেকে দুই চামচ নিয়ে পানির সাথে মিশিয়ে সকালে বা রাতে খেতে পারবেন। তবে আপনি যদি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খান তাহলে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধে বেশি উপযোগী হবে ত্রিফলা ওষুধটি। 

আপনার বাসায় যদি ঘি বা মধু থাকে তাহলে ঘি বা মধুর সঙ্গে মিশিয়েও ত্রিফলা খেতে পারে। যেহেতু ত্রিফলা তিন ফলের মিশ্রণে তৈরি হয় তাই এর উপকারী গুণ অনেক। গরম পানির সঙ্গেও ত্রিফলার গুড়া মিশিয়ে আপনি সেবন করতে পারেন। অন্যদিকে দুধের সঙ্গে মিশিয়েও এই ত্রিফলা সেবন করা যায়। তবে প্রতিদিন ত্রিফলা সেবন করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দ্বিগুণ বেড়ে যায়। 

খাবারের আগেও এটি সেবন করতে পারেন। আবার খাওয়ার পরও ত্রিফলা গুড়া করে গরম পানির সাথে মিশিয়ে চায়ের মত খাওয়া যায়। তবে ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই খাওয়ার আগে ত্রিফলা খেতে হবে। চুলের গোড়া শক্ত করতে ব্যবহার করা যেতে পারে ত্রিফলার তেল। কেননা ত্রিফলা চুলের গোড়া মজবুত করতে ও চুলকে ঝরে পড়া থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। আর আপনি যদি এসব নিয়ম মেনে ত্রিফলা খেতে পারেন তাহলে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য তা বেশ কার্যকরী ও উপকারী।

ত্রিফলা তৈরির নিয়ম

আপনি যদি বাসায় বসে থেকে ত্রিফলা তৈরি করতে চান তাহলে অবশ্যই কিছু নিয়ম মেনে আপনাকে ত্রিফলার তৈরি করতে হবে। প্রথমে আপনাকে ত্রিফলা তৈরি করার জন্য যে তিনটি ফলের দরকার সে তিনটি ফল জোগাড় করতে হবে। আমলকি, হরতকি ও বহেরা সংগ্রহ করে সেটা শুকিয়ে রাখতে হবে।ফল তিনটি যখন শুকিয়ে যাবে তখন এগুলো গুড়া করে নিতে হবে। 

গুড়া করে নেওয়ার পর তিন ফলের গুড়া একসঙ্গে মিশ্রণ করে তৈরি করা হয় ত্রিফলা। আর বাসায় তৈরি ত্রিফলা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম। তবে আপনি আমলকি, হরতকি ও বহেরার মিশ্রণ আলাদা করেও বিভিন্ন সময়ে খেতে পারেন। বাসায় ত্রিফলা তৈরি করার আগে একটি বিষয়ের উপর লক্ষ্য রাখতে হবে যেন আমলকি, হরতকি ও বহেরা সঠিক পরিমাণে যেন হয়।

শরীরের ভিটামিনের চাহিদা পূরণ হবে। অন্যদিকে পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান করে থাকে বাড়িতে তৈরি এই ত্রিফলার। ত্রিপলা তৈরি করার সময় বিচি বাদে তিনটি ফলের ছাল গুড়া করে তৈরি করতে হবে ত্রিফলা। তাহলে এর একটা ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। আর আপনি এসব নিয়ম মেনে বাসায় বসেই তৈরি করতে পারেন ত্রিফলা।

ত্রিফলা জলের উপকারিতা

আপনি ত্রিফলা জল তৈরি করেও খেতে পারেন এতে বেশ উপকার। ত্রিফলার জল শরীরের পেটের মেদ কমাতে বেশ উপকারী। আপনি যদি ত্রিফলা ভেজানো জল প্রতিদিন নিয়ম করে খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীরের মেদ কমানো সম্ভব। আপনার দাঁতে যদি হলদে ভাব থাকে তাহলে সেই হলদে ভাব দূর করতে পারবেন ত্রিফলা জলের মাধ্যমে। 

সেজন্য আপনাকে প্রথমে ত্রিফলা জলের মধ্যে রাখতে হবে। পরবর্তীতে সেই জল দিয়ে মুখ কুলকুচ করলে আপনি দেখতে পারবেন যে আপনার দাঁতের মধ্যে থেকে হলদে ভাব দূর হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে দাঁতের মাড়ির যে সমস্যা এই সমস্যা দূর করতে ত্রিফলা জল বেশ কার্যকরী। মুখের মধ্যে দুর্গন্ধ দূর হয়ে যায় এই ত্রিফলা জলের কারনে। 

তাছাড়াও আপনি যদি নিয়মিত ত্রিফলা জল পান করতে পারেন তাহলে আপনার শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ব্যাথা উপশম হবে। পেটের মধ্যে গ্যাসের কারণে হজমের সমস্যা হয়ে থাকে বিভিন্ন সময়। পেটের এই হজমের সমস্যা দূর করার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে ত্রিফলা ভেজানো জল। ত্রিফলা জল খেলে চোখের দৃষ্টিশক্তি দিন দিন বৃদ্ধি পায়। 

ত্রিফলা প্রতিনিয়ত সেবনে মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে ত্রিফলা জল সেবনের মাধ্যমে আপনার শরীরের যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সেটা দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাই নিয়ম করে ত্রিফলা ভেজানো জল পান করা উচিত যার শরীরের জন্য বেশ উপকারী।

সকালে খালি পেটে ত্রিফলা খেলে কি হয়

অনেকের মনে প্রশ্ন থেকে যায় যে সকালে খালি পেটে ত্রিফলা খেলে কি উপকার পাওয়া যায়? চলুন তাহলে এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া যাক-আপনি যদি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ত্রিফলা খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীরের জন্য তা বেশ কার্যকরী। কেননা খালি পেটে ত্রিফলার ভেজানো জল যদি খাওয়া যায় তাহলে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়ে যায়।

তার সাথে দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত পড়া বন্ধ হয় এবং দাঁতের যে হলদে ভাব সেটা দূর করতে সক্ষম। সকালে খালি পেটে ত্রিফলা খেলে শরীরের কোষ কলা কে ক্যান্সার আহত করতে পারে না। কেননা ত্রিফলা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সক্ষম। ত্রিফলা খালি পেটে খেলে মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং শরীরের মানসিক ক্লান্তিভাব দূর হয়ে যায়। 

তাছাড়াও ত্রিফলা খাওয়ার ফলে শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং স্টোকের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। চোখের সমস্যা সমাধানের জন্য আপনি খালি পেটে ত্রিফলা ভেজানো পানি খেতে পারেন এতে আপনার চোখের দৃষ্টিশক্তি ও সমস্যা দূর হয়ে যাবে। শরীরের ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করে থাকে ত্রিফলা যদি আপনি সকালে খালি পেটে খেতে পারেন। তাই এসব উপকার পেতে গেলে অবশ্যই আপনাকে সকালে খালি পেটে ত্রিফলা অথবা ত্রিফলা জল খেতে হবে তাতে আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটবে।

ত্রিফলা অপকারিতা ও ক্ষতিকর দিক

ত্রিফলার উপকারিতা ও অপকারিতা মধ্যে ত্রিফলার উপকারিতা জানলাম। চলন তাহলে এবার জেনে নেই ত্রিফলার অপকারিতা। ত্রিফলা শরীরের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী তবুও এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আপনার শরীরের মধ্যে দেখা দিতে পারে। কেননা সবকিছুরে উপকারিতার দিক থাকলেও আছে কিছু অপকারিতার দিক। চলুন তাহলে জেনে নেই ত্রিফলার অপকারিতা গুলো-
ত্রিফলার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা৩
অনেক সময় ত্রিফলা অধিক সেবনের কারণে শরীরের মধ্যে কিছু সমস্যা দেখা দেয়। আপনি যদি ত্রিফলা বেশি মাত্রায় সেবন করে থাকেন তাহলে আপনার শরীরে পেটের মধ্যে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে ।পেট ফুলা অথবা পেট ফাঁপা এসব সমস্যা আপনার শরীরে দেখা দিলে ত্রিফলা খাওয়া বন্ধ করে দিন। তাছাড়াও ত্রিফলাতে অনেকেরই এলার্জি আছে। 

এটা বোঝার জন্য আপনাকে ত্রিফলা খেতে হবে যদি ত্রিফলা খেয়ে আপনার শরীরে এলার্জি লক্ষণ দেখা দেয়। তাহলে ত্রিফলা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। ডায়রিয়া রোগীরা ত্রিফলা থেকে দূরে থাকুন। গর্ভকালীন সময়ে গর্ভবতী মায়েরা ত্রিফলা সেবন পরিহার করতে হবে। অথবা আপনি যদি ত্রিফলা খেয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ত্রিফলা সেবন করে থাকবেন। 

শিশুদের ব্যবহারের ক্ষেত্রে ও খাওয়ানোর আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়ানো উচিত। আপনি যদি কোন রোগ প্রতিরোধে কোন প্রকার ঔষধ সেবন করে থাকেন আর সেক্ষেত্রে ওই রোগ নিরাময়ের জন্য ত্রিফলা খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে। ত্রিফলা খাওয়ার পর অবশ্যই দেখতে হবে সেটা আপনার শরীরের স্বাস্থ্যের উপকার করতেছে কি না। যদি উপকারে না আসে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিয়ম মেনে ত্রিফলা খাওয়া উচিত।

ত্রিফলা কি প্রতিদিন খাওয়া যায়

ত্রিফলা কি প্রতিদিন খাওয়া যায় এ প্রশ্নের উত্তরটা এভাবে দেওয়া যেতে পারে যে-হ্যাঁ ত্রিফলা প্রতিদিন খাওয়া যায় যদি আপনি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে পারেন। ত্রিফলা আপনি যদি প্রতিদিন খান তাহলে আপনার শরীরের সুগারের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করবে। তাছাড়াও রক্ত পরিশোধনে ত্রিফলা ব্যাপক সহায়ক। অন্যদিকে ত্রিফলা শরীরের উপকারী কোলেস্টোরের মাত্রা বাড়ায় এবং ক্ষতিকর কোলেস্টরের মাত্রা হ্রাস করতে সাহায্য করে। 

তাই ত্রিফলার সুফল পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে একজন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ত্রিফলা সেবন করতে হবে। তাছাড়াও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে পারে ত্রিফলা। ত্রিফলা প্রতিদিন সেবন করলে শরীরের যে ক্লান্তি ভাব সেটা দূর হয়ে যায়। তার সাথে শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় মোকাবিলা করে ত্রিফলা। তবে ত্রিফলা প্রতিদিন সেবন করার আগে অবশ্যই একজন ডাক্তারের মতামত নিয়ে সেবন করা উচিত।

ত্রিফলার পাউডারের উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম

ত্রিফলার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানলাম। কিন্তু ত্রিফলার পাউডার খাওয়াও স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। কেননা ত্রিফলার পাউডার শরীরের স্বাস্থ্যের উন্নতি সাধন করে থাকে। যদি নিয়ম মেনে ত্রিফলার পাউডার খাওয়া যায় তাহলে শরীরের ডায়াবেটিস কন্ট্রোল করা সম্ভব। ত্রিফলার পাউডারে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ জীবাণু মোকাবিলা করতে সক্ষম। 

সকালে ১/২ চামচ পরিমাণে পাউডার পানির সাথে মিশিয়ে চায়ের মতো করে খেলে শরীরের পেটের সমস্যা দূর হয়ে যেতে পারে। অন্যদিকে এক বা দুই চামচ পরিমাণে পাউডার পানির সাথে মিশিয়ে রাতে ঘুমানোর আগে খাওয়া যেতে পারে এতে করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। তবে ত্রিফলা পাউডার খাওয়ার আগে নিয়ম মেনে অবশ্যই সেবন করবেন। আপনি যে রোগ নিরাময়ের জন্য ত্রিফলার পাউডার খেতে ইচ্ছুক সেই রোগের জন্য অবশ্যই ডাক্তারের নিয়ম মেনে ত্রিফলার পাউডার সেবন করবেন।

ত্রিফলার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে লেখকের শেষকথা

ত্রিফলার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানলাম এবং আরও জানলাম ত্রিফলা কি প্রতিদিন খাওয়া যায় সেই সম্পর্কে। ত্রিফলা শরীরের রোগ সাড়াতে বেশ কার্যকরী। তাই নিয়ম মেনে ত্রিফলা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তবে আমার পরামর্শে এটাই যে, আপনি যে রোগ নিরাময়ের জন্য ত্রিফলার জল অথবা ত্রিফলার পাউডার খাবেন। 

অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করবেন। এতে ত্রিফলার কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আপনার শরীরে দেখা দিবে না। আর্টিকেলটি যদি আপনাদের কোন উপকারে এসে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এরকম আরো আর্টিকেল সবার আগে পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করে রাখতে পারেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url