অর্জুন গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা জানুন

আপনি যদি অর্জুন গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে না জেনে থাকেন।তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে  অর্জুন গাছের উপকারিতা এবং হৃদয়ের ব্যাধির চিকিৎসায় অর্জুন গাছের ছাল ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।
অর্জুন-গাছের-উপকারিতা-ও-অপকারিতা১
আসুন আমরা আজকে জেনে নেই অর্জুন গাছের বাকল এবং তার আরো কিছু ঔষধি গুণ  যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী।অর্জুন গাছের উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে জানতে আমাদের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ অর্জুন গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা

অর্জুন গাছ দেখতে কেমন 

অর্জুন গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা  জানার আগে অর্জুন  গাছ অনেকেই আমরা  চিনতে পারি না।আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে  আমরা খুব সহজে অর্জুন গাছ চিহ্নিত করতে পারব।সাধারণত অর্জুন গাছ হল চিরহরিৎ বৃক্ষ।তাই আমাদের চিরহরিৎ বৃক্ষ কেমন দেখতে সেটা আগে জানতে হবে তাহলে আমরা অর্জুন গাছকে সহজে চিহ্নিত করতে পারব। যেসব গাছের পাতা সব সময় সবুজ থাকে এবং শীতকালে পাতাগুলো ঝরে পড়ে যায় সাধারণত সেসব বৃক্ষকে আমরা চিরহরিৎ বৃক্ষ বলে থাকি।

আর এই চিরহরিৎ বৃক্ষগুলো যেসব এলাকায় বেশি বৃষ্টিপাত হয় সেসব এলাকায় বেশি জন্মায়।তবে বেশিরভাগ আমরা নদীর ধারে এবং রাস্তার ধারে অর্জুন গাছ দেখে থাকি।অর্জুন গাছের পাতা দেখতে কিছুটা পেয়ারা গাছের পাতার মতো শুধু তফাৎ পেয়ারা গাছের পাতা ছোট আর অর্জুন গাছের পাতা একটু বড়। 

অর্জুন গাছে ফেব্রুয়ারি শেষের দিকে এবং জুন মাসের মধ্যে ফল দেখা দেয়। যেহেতু অর্জুন গাছ বৃহৎ আকারে হয়ে থাকে সেহেতু এটি সর্বোচ্চ ১৯ থেকে ২৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে।আর এভাবেই আমরা সহজেই অর্জুন গাছ চিহ্নিত করতে পারি।

অর্জুন গাছের জন্য উপযুক্ত মাটি

বাংলাদেশের আবহাওয়া অর্জুন গাছের জন্য খুবই উপযোগী। তাই বাংলাদেশেও ব্যাপক পরিমাণে অর্জুন গাছ দেখা যায়।যেহেতু অর্জুন গাছ নদীর পাড়ে বেশি দেখা যায় সেজন্য বলা যায় যে অর্জুন গাছের জন্য স্যাঁতস্যাঁতে এবং দোআঁশ মাটি খুবই উপযোগী।আমরা যদি মনে করি, বাড়ির পাশে ফাঁকা  জায়গায় অর্জুন গাছের চারা রোপণ করব। 

তাহলে প্রথমে আমাদের সেই জমিটিকে অর্জুন গাছের চারা রোপনের জন্য উপযুক্ত করে নিতে হবে। পরবর্তীতে আমাদের পরিপক্ক ফল থেকে বীজ সংগ্রহ করে রোপন করতে হবে।অর্জুন গাছে পরিপক্ক ফল আসে ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে এবং মে মাসের আগেই।তাই আমাদের সে সময়ে পরিপক্ক ফল থেকে অর্জুন গাছের জন্য চারা বা বীজ সংগ্রহ করতে হবে।নিচে জানবো অর্জুন গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং তার সাথে আরো জানবো হৃদয়ের ব্যাধির চিকিৎসায় অর্জুন গাছের ছাল ব্যবহার কতো টা উপকারী।

অর্জুন গাছের ঔষধি গুন

বাংলাদেশের যে সকল ঔষধি গাছ আছে সেসকল গাছের থেকে অর্জুন গাছের ঔষধি গুন অনেক বা ব্যাপক পরিমাণে।কেননা অর্জুন গাছের পাতা থেকে শুরু করে ফল এবং ছাল পর্যন্ত ওষুধের জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।সাধারণত আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় অর্জুন গাছের ছালের ব্যবহার বেশি করা হয়ে থাকে।

সবচাইতে বেশি যারা হৃদরোগে আক্রান্ত তাদের অর্জুন গাছের ছাল খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।বুকের ব্যাথা,জ্বর,কান্সার,পেট ব্যাথা,মূত্র জ্বালা পোড়া রোগীর জন্য অর্জুন গাছের ছাল বেশি উপকারি ।আরো শরীরের যাবতীয় রোগ প্রতিরোধে অর্জুনের ফল,পাতা এবং ছালের রস কার্যকারী ভূমিকা রাখে।

অর্জুন গাছের উপকারিতা

অর্জুন গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা জানার আগে জেনে নেই অর্জুন গাছের উপকারিতা। চিকিৎসা শাস্ত্রে অর্জুন গাছের উপকারিতা ব্যাপক। কেননা অর্জুন গাছের ছাল থেকে শুরু করে পাতা এবং ফল সবকিছুই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।আসুন জেনে নেই, অর্জুন গাছের উপকারিতা গুলোঃ
অর্জুন-গাছের-উপকারিতা-ও-অপকারিতা২
উচ্চ রক্তচাপেঃ আমাদের শরীরে অনেক সময় উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয়। যার ফলে আমাদের শরীরের রক্ত প্রবাহ বিঘ্ন ঘটে এবং শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।কিন্তু আমরা যদি অর্জুন গাছের ছাল গুড়া করে পরিমান মতো পানি (২ চামচ )গুলিয়ে সেটা হালকা গরম করে খাই তাহলে আমাদের আর উচ্চ রক্তচাপ দেখা দিবে না।

ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ ক্যান্সার আমাদের শরীরের কোষকলাকে ধ্বংস করে।কিন্তু অর্জুন গাছের ছালে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট  থাকার কারণে সেটা ক্যান্সারের কোষকলাকে ধ্বংস করতে সক্ষম হয়।

মূত্র জ্বালা পোড়ায়ঃ আমাদের অনেক সময় মূত্র ত্যাগের সময় অনেক ব্যাথা করে।আমরা যদি অর্জুনের ছাল পানিতে ভিজিয়ে কিছুক্ষন রাখার পর সেটা ফুটিয়ে ঠান্ডা করে খাই তাহলে আমাদের এই সমস্যা হবে না। 

কাশির  নিরাময়েঃ অর্জুনের বাকল বা ছাল যদি আমরা অর্জুন গাছের কচি কোনো পাতার রস মিশিয়ে নেওয়ার পর শুকিয়ে রাখি সেটা যখন শুকিয়ে যাবে তখন চূর্ণ করে নিয়ে খেতে হবে।তাহলে কিছুটা কাশির উপদ্রব থেকে রক্ষা পাবেন।

পেটের চর্বি কমাতেঃ আমদের অনেকের পেটের চর্বি বেড়ে যাওয়ার কারনে ভূড়ি বা মেদ বেড়ে যায় আমরা যদি ছালে ভিজিয়ে রাখা পানি খাই তাহলে আমাদের পেটের চর্বি কমে যাবে।

ডায়বেটিস ঠিক রাখতেঃ বর্তমানে যে হারে ডায়বেটিস রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে সেক্ষেত্রে আমরা যদি অর্জুন গাছের ছালের সাথে  জামুন গাছের ছাল ভালো করে গুড়া করে পানিতে মিশিয়ে সকালে খেতে পারি তাহলে অনেকটাই ডায়াবেটিস আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

ত্বকের জন্যঃ আমাদের বিভিন্ন সময় ত্বকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।যদি ব্রণ উঠে থাকে এবং ত্বকে ফোসকা জাতীয় কিছু হয়ে থাকে তাহলে ত্বকে ফসকা নিরাময়ে অর্জুন গাছের ছাল ব্যবহার করতে পারি।তবে অবশ্যই মনে রাখতে হবে অর্জুন গাছের ছাল গুঁড়ো করে নারকেল তেলের সঙ্গে ত্বকে যে জায়গায় ফোসকা উঠেছে সেই জায়গায় ভালো করে লাগিয়ে দিতে হবে।তাহলে কিছুটা আরাম পাওয়া যাবে।

জ্বর নিরাময়েঃ অর্জুনের  ছাল পানিতে ভিজিয়ে রেখে যদি সেই পানি ছেকে নেওয়ার পর আমরা পান করি তাহলে আমাদের জ্বর অনেকাংশে কমে যাবে।

ভাংগা হাড় ঠিক করতেঃ শরীরের কোন অংশ যদি হাত বা পাঁ ভেংগে যায় তাহলে সেই জায়গার হাড় যথাস্থানে প্রতিস্থাপন করার পর যদি অর্জুনের বাকলের রসের প্রলোপ দেই তাহলে হাড় সোজা হতে অনেকাংশে সাহায্য করে।

হাপানী রোগ সারাতেঃ যদি  অর্জুনের  ছালের ধোয়াঁ নিতে পারেন তাহলে হাপানি রোগীরা অনেকটা আরাম পাবে।

শরীর ক্লান্তি দূরীকরনেঃ যদি প্রতিদিন অর্জুন গাছের ছাল পানিতে ভিজিয়ে রেখে খেতে পারি তাহলে আমাদের শরীরের ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে।

চুল মজবুত  রাখতেঃ আমরা যদি ছালের রস চুলের মধ্যে মিশিয়ে কিছুক্ষন রাখতে পারি তাহলে আমাদের চুলের গোড়া শক্ত হবে তার সাথে সাদা চুল কালো হতে সাহায্য করবে।

হজমশক্তিতে ঃআমরা যদি অর্জুনের ছাল ভিজানো পানি পান করি। তাহলে হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

পেটের ব্যাথা নিরাময়েঃ পেটের মধ্যে যখন জ্বালাপোড়া হবে এবং ব্যথা করবে তখন আমরা সকাল এবং রাতে অর্জুন গাছের ছাল ভিজিয়ে রাখা পানি পান করলে কিছুটা পেট ব্যাথা কমে যাবে এবং আমরা অনেক টাই আরাম পাব।

হার্ট ভালো রাখতে ঃ যাদের হার্টের রোগ আছে। তারা অর্জুনের ছালের রস খেতে পারে তাতে হার্ট ভালো থাকবে।

কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতেঃ আমাদের যাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি তারা যদি অর্জুন গাছের রস খেয়ে থাকি তাহলে আমাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যাবে।

অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা

অর্জুন গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা  জানতে হলে জানতে হবে অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা সম্পর্কে।একজন স্বাভাবিক মানুষ যদি প্রতিদিন অর্জুন গাছের ছাল ভেজানো পানি পান করে থাকে। তাহলে তার শরীরে কোন ক্লান্তি ভাব বা দুর্বলতা দেখা দিবে না। যাদের শরীরে উচ্চ রক্তচাপ আছে তারা প্রতিদিন অর্জুন গাছের ছালের রস খেতে পারে। কেননা অর্জুন গাছের ছালের রস রক্ত প্রবাহ সচল রাখতে সাহায্য করে।

আমাদের শরীরে কোন জায়গায় যদি ক্ষত সৃষ্টি হয় তাহলে সেই জায়গায় অর্জুন গাছের পাতার পেস্ট করে প্রলোপ দিলে অনেকটা আরাম পাওয়া যায় এবং ক্ষত শুকিয়ে যেতে সাহায্য করে।অন্যদিকে যাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি এবং যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা প্রতিদিন যদি ছালে ভেজানো পানি একটু ফুটিয়ে খেতে পারে তাহলে কোলেস্টেরলের মাত্রা এবং ডায়াবেটিস স্বাভাবিক থাকে।

যাদের শরীরের তরল বের না হয়ে যাওয়ার কারনে শরীর অসুস্থ হয়ে যায় তারা অর্জুন গাছের ছালের রস খেলে তাদের শরীর থেকে অতিরিক্ত তরল নির্গত হয়ে যায়।যাদের শরীরে দীর্ঘমেয়াদী কোন রোগ আছে তারা অর্জুন গাছের ছালের রস খেতে পারে কেননা অর্জুন গাছের ছালের রসে এন্টি-ইনফ্লেমেটারি যৌগ থাকার কারনে দীর্ঘমেয়াদি রোগ সারাতে সাহায্য করে।

অর্জুনে গাছের ছালের পেস্ট যদি আমরা বাহ্যিক ভাবে শরীরে ব্যবহার করি তাহলে চুলকানি,একজিমা ও ফুসকরানি সাড়াতে সাহায্য করে।ডায়রিয়া কমাতে আমরা অর্জুন গাছের ছালে ভিজানো পানি খেতে পারি ।

অর্জুন গাছের পাতার উপকারিতা 

অর্জুন গাছের ছালের যেমন উপকারিতা আছে ঠিক তেমনি পাতার রসেরও উপকারিতা আছে । আসুন  জেনে নেই অর্জুন গাছের পাতার উপকারিতা।আমাদের শরীরের কোন জায়গায় যদি ক্ষত সৃষ্টি হয় তাহলে অর্জুন গাছের পাতার পেস্ট তৈরি করে সেখানে যদি প্রলোপ দেওয়া যায় তাহলে ক্ষত শুকিয়ে যায়।অর্জুন গাছের পাতায় অক্সি-আক্সিডেন্ট থাকার কারনে আমাদের হাড় এবং পেশিগুলো মজবুত এবং সচল রাখে।

 শ্বাস নালীর স্বাস্থ্য সুস্থ রাখতে আমরা অর্জুন গাছের পাতা ব্যবহৃত আয়ুর্বেদিক ঔষধ খেতে পারি যার ফলে আমাদের শ্বাসনালী সুস্থ থাকে।শরীরে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখতে অর্জুন গাছের পাতার রস খেতে পারি। অন্যদিকে ক্যান্সার নিরাময়ে অর্জুন গাছের পাতা বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

অর্জুন গাছের ছাল খাওয়ার নিয়ম 

আমরা অর্জুন গাছের ছাল বিভিন্নভাবে খেতে পারি কিন্তু অর্জুন গাছের ছাল সঠিকভাবে খাওয়া যায় তাহলে আমাদের শরীরের জন্য তা অনেক উপকারী।আসুন জেনে নেই, কিভাবে আমরা অর্জুন গাছের ছাল খাব।
প্রথমতঃ অর্জুন গাছের ছাল যদি গুড়া করে প্রতিদিন সকাল এবং রাতে খেতে পারি তাহলে আমাদের শরীরে রক্তচাপ কমে যাবে।

দ্বিতীয়তঃ অর্জুন গাছের ছালের গুড়া আমরা যদি দুধের সাথে মিশিয়ে সকাল এবং রাতে খেতে পারি তাহলে শরীর সুস্থ থাকবে।যার সাথে আমাদের বুকের ধরপাড়ানিও কমে যাবে।

তৃতীয়তঃ আমরা যদি কোন পরিপক্ক গাছের ছাল সংগ্রহ করি এবং সেটা কিছুদিন রোদে শুকিয়ে ভালো করে কেটে নিয়ে পানিতে ভিজিয়ে খেতে পারি তাহলে আমাদের শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক থাকবে এবং তার সাথে হৃদরোগ থেকে মুক্তি পাবো।

চতুর্থতঃ বাসক পাতা আমাদের শরীরের কাশি নিরাময়ে অনেক সাহায্য করে।এই বাসক পাতার সাথে যদি আমরা অর্জুন গাছের ছাল মিশিয়ে খেতে পারি তাহলে কাশি উপশমে, হাঁপানি এবং আমাশয় রোগের রোগীদের জন্য  খুব উপকারী।

অর্জুন গাছের চা খাওয়ার উপকারিতা এবং নিয়ম 

আমরা প্রতিদিন যদি সকালে অর্জুন গাছের ছালের চা খেতে পারি তাহলে আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী।আমাদের শরীরে যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তারা প্রতিদিন সকালে এবং রাতে অর্জুন গাছের ছালের চা খেলে বেশ উপকার পাব।১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে আমাদের শরীরে ক্লান্তি এবং দুর্বলতা সবই দূর হয়ে যাবে। তাই প্রতিদিন সকাল এবং রাতে অর্জুন গাছের ছালের ভিজিয়ে রাখা পানি ফুটিয়ে নিয়ে চায়ের মত খেতে পারি।

হৃদয়ের ব্যাধির চিকিৎসায় অর্জুন গাছের ছাল

আমাদের যাদের হার্টের সমস্যা তারা যদি অর্জুনের ছালের ভেজানো পানি খেয়ে থাকি তাহলে আমাদের হার্ট অনেক ভালো থাকবে।আমরা তো সবাই কমবেশি বন্য পেঁয়াজের সাথে পরিচিত। এই বন্য পেঁয়াজের সাথে যদি অর্জুন গাছের ছালের চূর্ণ করে খেতে পারি তাহলে স্টোক হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে  কমে যাবে। 

অন্যদিকে যাদের হার্টের পেশী দুর্বল তারা অবশ্যই অর্জুন গাছের ছাল চূর্ণ করে বা গুঁড়ো করে পানির সঙ্গে মিশিয়ে অথবা অর্জুন গাছের ছাল ভেজানো পানি ফুটিয়ে খেতে পারে তাহলে হার্টের পেশি শক্তিশালী হবে। অন্যদিকে যাদের হার্ট ব্লকের সমস্যা আছে তারা অর্জুন গাছের ছালের ভেজানো পানি খেতে পারেন। 

আমরা যদি প্রতিদিন সকালে এবং রাতে প্রায় তিন মাস অর্জুন গাছের ছালের ভেজানো পানি খেতে পারি তাহলে আমাদের শরীরের সব শারীরিক সমস্যা দূর হয়ে যাবে।তার সাথে আমাদের শরীরের সকল ক্লান্তি এবং দুর্বলতা কেটে যাবে।আমরা যদি অর্জুনের ছাল নিয়মিত খাই তাহলে আমাদের শুধু হার্টের স্বাস্থের ঝুকিঁ কমে না তার সাথে আমাদের হার্টের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

তাছাড়া অর্জুনের ছালের রস আমাদের টিস্যু গুলোর চাপ কমিয়ে আনে এবং কোষকলার বয়স বাড়িয়ে দেয়।তাই আমাদের অর্জুনের ছালের রস বা ছালে ভিজানো পানি খাওয়া উচিত বলে আমি মনে করি ।

ত্বকের যত্নে অর্জুনের ছালের ব্যবহার

আমাদের যাদের মুখে ব্রন আছে তাদের জন্য এটা অনেক উপকারি । কেননা ব্রন সাড়াতে এটা অনেক কার্যকারী।যদি আমাদের মুখে ব্রন হয়ে থাকে তাহলে আমাদের প্রথমে অর্জুনের ছালের রসের পেস্ট তৈরী করতে হবে।তারপর সেটা ব্রন স্থানে লাগিয়ে নিতে হবে এবং কিছুক্ষন অপেক্ষা করতে হবে পরবর্তীতে সেটা ধুয়ে ফেলতে হবে।
অর্জুন গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা১১
এভাবে কিছুদিন এটা প্রয়োগ করলে ব্রন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।আমাদের শরীরে যদি কোনো কোষ এবং টিস্যু প্রসারণ হয়ে যায় তাহলে সেটা সংকোচন জন্য আমরা ছালের রসের পেস্ট ব্যবহার করতে পারি।যার ফলে আমাদের টিস্যু এবং কোষ গঠন স্বাভাবিক থাকবে।

আসবাপত্র সামগ্রী তৈরীতে অর্জুন গাছের ব্যবহার

অর্জুন গাছ থেকে যে কাঠ পাওয়া যায় তা খুব শক্ত এবং মজবুত। অর্জুন গাছের কাঠ দিয়ে তৈরী করা যায় বাড়ির কাঠামো।কাঠ শক্ত এই জন্য এই কাঠ দিয়ে নৌকা তৈরী করা হয়ে থাকে ।কৃষি উপকরন এবং নলকূপ খননে এই কাঠ ব্যবহার করা হয়।পুরানো দিনে এই গাছের কাঠ দিয়া গরুর গাড়ির চাকা তৈরী করা হতো।

অর্জুন গাছের অপকারিতা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

অর্জুন গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা মধ্যে অর্জুন গাছের উপকারিতা অনেক। কিন্তু আমাদের এটা মাথায় রাখতে হবে সব কিছুরই একটা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে তাই অর্জুন গাছের ছালের রস,ফলের রস ও পাতার রস আমরা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করব। অন্যদিকে গর্ভবতী মায়েদের অর্জুন গাছের ছালের রস ও পাতার রস এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।

অন্যদিকে যাদের শরীরে রক্ত জমাট বাধে না তারা অবশ্যই অর্জুন গাছের পাতার রসের প্রলোপ তাদের ক্ষত স্থানে ব্যবহার করবেন না।শরীরে যদি সুগার মাত্রা বেশি থাকে তাহলে আমাদের অর্জুনের বাকল বা ছালের রস খাওয়ার আগে ডাক্তার পরামর্শ নিতে হবে।অন্যদিকে আপনারা যদি কোনো রোগের জন্য অন্য কোনো ঔষধ খেয়ে থাকেন তাহলে সেই রোগের জন অর্জুন বাকল খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তার পরামর্শ নিবেন।

কেননা যদি সেই ঔষধের সাথে অর্জুনের ছালের বা বাকলে মিথস্ক্রিয়া ঘটে তাহলে সেটা আপনার শরীরের জন্য ক্ষতিকর।তাছাড়া কারো শরীরের এর উপকারিতা দেখা না দিয়ে এর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।অনেকের শরীরে বমি বমি ভাব,শরীরে ব্যাথা,কোষ্ঠকাঠিন্য এমনকি মাথা ব্যাথা দেখা দিতে পারে।অর্জুনের বাকল শিশুদের কাছ থেকে দূরে রাখতে হবে ।তাই অর্জুনের বাকল খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তার পরামর্শ নিবেন।

অর্জুন গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে লেখকের শেষকথা

অর্জুন গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা জানলাম এবং আরো জানলাম হৃদয়ের ব্যাধির চিকিৎসায় অর্জুন গাছের ছাল ব্যবহার এবং গুনাগুন।আমাদের পরামর্শ এটা যে অর্জুন গাছের ছালের রস,পাতার রস ব্যবহার করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।যদি আপনারা এটা ব্যবহার করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ না নেন তাহলে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।কিন্তু সবার ক্ষেত্রে কোনো পার্শপ্রতিক্রিয়া নাও দেখা দিতে পারে।

তবে গর্ভবর্তী মা এবং শিশুদের অর্জুন গাছের ছাল ব্যবহার থেকে বিরত রাখুন। আমাদের এই আর্টিকেলটি যদি পড়ে আপনাদের ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন।এরকম আরো আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন।ধন্যবাদ 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url