হাঁসের ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা-হাঁসের ডিমের ক্ষতিকারক দিক-কাঁচায় খেলে
হাঁসের ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনি কি জানতে চাচ্ছেন। তাহলে আমাদের আর্টিকেলটি আপনাদের জানার সুযোগ করে দিতে পারে এবং তার সাথে আরো জানতে পারবেন হাঁসের ডিম কিভাবে সংরক্ষণ করবো এই সম্পর্কে।
শৈশবকাল থেকে আমরা সবার কাছ থেকে এটা জেনে আসি যে মুরগীর ডিমের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন আছে।কিন্তু হ্যাঁ তার থেকে কিন্তু কোনো কমতি নেই হাঁসের ডিমে।হাঁসের ডিম প্রচুর পরিমাণ ক্যালরি এবং ভিটামিন পাওয়া যায়।
পোস্ট সূচিপত্রঃ হাঁসের ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা
- হঁসের ডিমের উৎস
- আমরা কেন ডিম খাবো
- একটি ডিমের পুষ্টিগুন
- হাঁসের ডিম এবং মুরগীর ডিমের পার্থক্য
- হাঁসের ডিমের উপকারিতা
- হাঁসের ডিমের ক্ষতিকারক দিক -এলার্জিতে
- খাদ্য তালিকায় হাঁসের ডিম
- হাঁসের ডিম খাওয়ার নিয়ম
- হাঁসের ডিমের দাম
- হাঁসের ডিম কিভাবে সংরক্ষণ করবো
- হাঁসের ডিমের অপকারিতা
- হাঁসের ডিমের ক্ষতিকারক দিক-কাঁচায় খেলে
- হাঁসের ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে লেখকের শেষকথা
হাঁসের ডিমের উৎস
হাঁসের ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা জানার আগে জেনে নিতে হবে হাঁসের ডিমের উৎস সম্পর্কে। সাধারনত আমরা জানি শুধুমাত্র গ্রাম অঞ্চলে হাসঁ পালন করা হয়ে থাকে। শুধু গ্রাম অঞ্চলে হাঁস পালন করে কি আমরা বাংলাদেশে হাঁসের ডিমের চাহিদা পূরন করতে পারি না আমরা পারি না।তাই কিছু কিছু মানুষ এই হাঁস পালন তাদের মূল পেশা হিসাবে নিয়েছে।
তাই তারা হাঁসের খামার দিয়ে হাঁস প্রতিপালন করা শুরু করেছে।সেখান থেকে তারা প্রতিনিয়ত ডিম সংগ্রহ করতেছে এবং সেগুলো বাজারজাত করতেছে ।এতে তারা লাভবান হচ্ছে এবং এর পাশাপাশি বাজারে ডিমের চাহিদা পূরণ হচ্ছে।
আমরা কেন ডিম খাবো
দৈনদিন জীবনে অনেক ধরনের কাজ করে থাকি এই কাজ করার জন্য যা প্রয়োজন তা হলো আমাদের শরীরের শক্তি এবং মনোবল।আমরা যদি ক্যালরি যুক্ত খাবার না খাই তাহলে আমরা যতো খাই না আমরা শক্তি পাবে না। আর এই হাঁসের ডিমের মধ্যে প্রচুর পরিমানে প্রোর্টিন রয়েছে যা আমরা অল্প খরচে পেয়ে যাই।তাই আমাদের সপ্তাহে দুইদিন হলেও খাবারের তালিকায় ডিম রাখা প্রয়োজন।
একটি ডিমের পুষ্টিগুন
আমরা সবাই এটা জানি যে মুরগির ডিমের মধ্যে অনেক ধরনের পুষ্টি। কিন্তু তাই বলে হাঁসের ডিমের কথা ভুলে গেলে চলবে না। হাঁসের ডিমও অনেক ধরনের পুষ্টি রয়েছে। একটি হাঁসের ডিমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, জিংক, সালফার, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট ও কোলেস্টেরল রয়েছে।
যে উপাদানগুলো আমাদের শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর শুধুমাত্র প্রতিদিন একটি করে ডিম খেলে আমাদের শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধি সম্ভব। তাই আমাদের প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় একটি করে ডিম রাখা প্রয়োজন।নিচে জানবো হাঁসের ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে এবং হাঁসের ডিম কিভাবে সংরক্ষণ করবো।
হাঁসের ডিম এবং মুরগীর ডিমের পার্থক্য
আমরা জানি, ডিম সাধারণত একই ধরনের কিন্তু আমরা একটা ডিম দেখলে খুব সহজেই বলে দিতে পারি কোনটা হাঁসের ডিম আর কোনটা মুরগির ডিম। কেননা মুরগির ডিমের তুলনায় হাঁসের ডিম একটু বড় হয় যার কারণে আমরা খুব সহজে বলতে পারি কোনটা হাঁসের ডিম আর মুরগির ডিমে।তাছাড়াও মুরগির ডিমের তুলনায় হাঁসের ডিমের আবরণ অনেক পুরু হয় এবং সেটা অনেকদিন রেখে খাওয়া যায়।
হাঁসের ডিমের উপকারিতা
হাঁসের ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা জানার আগে শুধু হাঁসের ডিমের উপকারিতা আগে জেন নেই। হাঁসের ডিমের উপকারিতা অনেক কেননা হাঁসের ডিমে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরিযুক্ত উপাদান রয়েছে।যা একটা মানুষের শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য খুবই প্রয়োজন ।আসুন জেনে নেই হাঁসের ডিমের উপকারিতা।
প্রোর্টিন ও শক্তিতেঃ শরীরকে সুস্থ রাখতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিনযুক্ত ও ক্যালরিযুক্ত খাবার প্রয়োজন যা আমরা খুব সহজে হাঁসের ডিম থেকে পেয়ে যেতে পারি।
হাড় মজবুত এবং ওজনেঃ আমাদের শরীরের হাড় শক্ত এবং মজবুত রাখার জন্য প্রতিদিন আমাদের খাবারের তালিকায় হাঁসের ডিম রাখা প্রয়োজন। অন্যদিকে ডিমের সাদা অংশ যাকে আমরা কুসুম বলে থাকি শুধুমাত্র সেটি যদি খাবার হিসাবে খেয়ে থাকি তাহলে আমাদের ওজন কখনো বৃদ্ধি পাবে । কেননা হাঁসের ডিমের কুসুমে কোন ফ্যাট বিদ্যমান থাকে না।
দৃষ্টিশক্তি এবং ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ হাঁসের ডিমের মধ্যে ভিটামিন "এ" থাকার কারণে আমাদের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায় অন্যদিকে হাঁসের ডিমের মধ্যে প্রচুর পরিমানে নিউটিন থাকায় ক্যান্সার আমাদের কোষকলাকে আহত করতে পারে না।
কোলেস্টেরলঃ হাঁসের ডিম খেলে আমাদের শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক থাকে।
দাঁত এবং হার্টঃ হাঁসের ডিম খেলে শিশুদের দাঁত শক্ত হয়। অন্যদিকে হাঁসের ডিম আমাদের হার্ট স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে।
হৃদরোগেঃ হাঁসের ডিম খেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশেই কমে যায়।
হাঁসের ডিমের ক্ষতিকারক দিক -এলার্জিতে
আমরা সবাই হাঁসের ডিম খেতে খুবই ভালোবাসি।কেননা হাঁসের ডিম রয়েছে প্রচুরে পরিমানে ভিটামিন,প্রোর্টিন ও ক্যালসিয়াম।তাই শরীরকে সুস্থ রাখতে আমরা সবাই হাঁসের ডিম খেতে ভালোবাসি।কিন্তু যাদের শরীরে এলার্জি আছে তারা শুধু হাঁসের ডিম না যে খাবার খেলে শরীরের এলার্জির লক্ষণ দেখা দেয় সেগুলো থেকে বিরত থাকবো।
এখন প্রশ্ন উঠতে পারে যে আমরা কিভাবে বুঝবো যে আমাদের হাঁসের ডিমে এলার্জি আছে।যদি হাঁসের ডিম খাওয়ার পর আমাদের শরীরে চুলকানি সৃষ্টি হবে ।চোখ লাল হয়ে যাওয়া ,হাচিঁ,সর্দি,পেটব্যাথা ও বমি বমি ভাব হতে পারে। হাঁসের ডিম খাওয়ার পর যদি আমাদের এসব সমস্যা দেখা দেয় তাহলে আমরা বুঝবো হাঁসের ডিমে আমাদের এলার্জি আছে । তখন আমাদের হাঁসের ডিম থেকে বিরত থাকতে হবে। আমার জানা মতে হাঁসের ডিম খেলে কখনো এলার্জি হয় না।
খাদ্য তালিকায় হাঁসের ডিম
আমরা সবাই কমবেশি হাঁসের ডিম খেতে ভালোবাসি। তাই আমাদের ইচ্ছে করে যে খাবারের তালিকায় তিন বেলায় যেন হাঁসের ডিম থাকে।আমাদের খাদ্য তালিকায় যদি প্রতিদিন একটা বা দুটো করে হাঁসের ডিম খাই তাহলে আমাদের শরীর জন্য খুব ভালো। কেননা যদি আমরা হাঁসের ডিম বেশি পরিমান খেয়ে থাকি তাহলে সেটা শরীর জন্য ভালো না। বেশি হাঁসের ডিম খেলে শরীর কোলেস্টেরল মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। তাই আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কমপক্ষে একটি হাঁসের ডিম রাখা প্রয়োজন।
হাঁসের ডিম খাওয়ার নিয়ম
আমরা সবাই কমবেশি হাঁসের ডিম ভেজে খেতে বেশি ভালোবাসি।কিন্তু হাঁসের ডিম যদি ভেজে খাওয়া যায় তাহলে যে তেলে সেটা ভাজা হয় সেই তেলে থাকা ফ্যাট আমাদের শরীরের কোলেস্টেরল মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।তাই আমাদের হাঁসের ডিম সিদ্ধ করে খেলে বেশি ভালো হয়।অন্যদিকে আমরা ডিম পানিতে পোচ করে খেতে পারি যার ফলে আমাদের শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক থাকবে।
হাঁসের ডিমের দাম
ডিমের দামটা নির্ভর করে এটা বাজারজাত করার উপর।যখন কোনো ডিম আমরা সরাসরি খামার থেকে সংগ্রহ করবো তখন আমরা সেটা অল্প মূল্যে পেয়ে যাবো। আর সেই ডিম যখন আমরা বাজার থেকে ক্রয় করবো তখন তার দাম একটু বেশি পড়ে যায় ।একটা হাঁসের ডিমের সর্বোচ্চ দাম হতে পারে ১৮-২০ টাকা এবং সর্ব নিম্ন দাম হলো ১০-১২ টাকা।
হাঁসের ডিম কিভাবে সংরক্ষণ করবো
আমরা যদি কখনো একসাথে খামার থেকে অনেক গুলো ডিম সংগ্রহ করে থাকি তাহলে আমরা সবচাইতে বেশি সমস্যা পড়ি যে আমরা এগুলো কিভাবে সংরক্ষণ করবো। আজকে আমরা হাঁসের ডিম কিভাবে সংরক্ষণ করে রাখতে হয় তা সম্পর্কে জানবো। যদি আমরা খামার থেকে একসাথে অনেকগুলো হাঁসের ডিম নিয়ে আসি তাহলে সেগুলো রাখার জন্য আমাদের বাজার থেকে ডিম রাখার ঝুড়িটা নিয়ে আসতে হবে।
আরো পড়ুনঃ বাটন ফোনে উপায় একাউন্ট খোলার নিয়ম
কেননা ঝুড়ির মধ্যে ডিম রাখলে সেটা ভেঙে যাওয়ার ভয় কম থাকে। অন্যদিকে আমাদের বাসায় যদি মাটির হাঁড়ি থাকে তাতেও আমরা হাঁসের ডিম রেখে দিতে পারি। মাটির হাঁড়িতে ডিম রাখলে ডিম অনেক দিন সংরক্ষণ করে রাখা যায়। আর যদি আমাদের বাসায় ফ্রিজ থেকে থাকে তাতেও আমরা ডিম রেখে দিতে পারি।
ফ্রিজে ডিম রাখলে সেগুলো আমরা এক থেকে দু মাস নিশ্চিন্তে রেখে দিতে পারি এবং তা সহজে নষ্ট হয়ে যাবে না। তবে আমাদের একটা বিষয়ের উপর খেয়াল রাখতে হবে যেন কোন ডিম সংগ্রহ করার সময় ফেটে যাওয়া ডিম আমরা কখনোই সংরক্ষণ করে রাখবো না। কেননা ফেটে যাওয়া ডিমে অনেক ধরনের জীবাণু আক্রমণ করতে পারে। তাই আমরা ফেটে যাওয়া ডিম কখনো সংরক্ষণ করবো না ।
হাঁসের ডিমের অপকারিতা
হাঁসের ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা মধ্যে হাঁসের ডিমেরউপকারিতা জানলাম এখন জেন নেই হাঁসের ডিমের অপকারিতা। হাঁসের ডিমের তেমন কিছু ক্ষতিকর দিক নেই। তবে যখন হাঁসের ডিম আমরা অধিক খাব তখন আমাদের কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। হাঁসের ডিম বেশি খেলে আমাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। যাদের শরীরে বহুমূত্র এবং ডায়াবেটিস রোগ আছে তারা অবশ্যই হাঁসের ডিম থেকে বিরত থাকবেন।
তাদের সপ্তাহে একটি বা দুইটি্র বেশি ডিম খাওয়া যাবে না। আপনি যদি মনে করেন হাঁস বা হাঁসের ডিমে আপনার এলার্জি তাহলে আপনি হাঁসের ডিম খাওয়া ছেড়ে দিন।অন্যদিকে যদি আপনি বেশি হাঁসের ডিম খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার পেট ব্যাথা হতে পারে।তাই আমার পরামর্শ আপনি নিয়ম মেনে হাঁসের ডিম খান। হাঁসের ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানলাম এবার জেনে নেই কাঁচায় খেলে হাঁসের ডিমের ক্ষতিকারক দিক গুলো।
হাঁসের ডিমের ক্ষতিকারক দিক-কাঁচায় খেলে
আমরা অনেকে হাঁসের ডিম কাঁচা খেতে বেশি পছন্দ করি । আমরা এটা মনে করে খাই যে কাঁচায় খেলে আমরা বেশি পুষ্টি পাবে।এটা আমাদের ভুল ধারনা, হাঁসের ডিম কাঁচা খাওয়া যাবে না ।কেননা যখন আমরা হাঁসের ডিম কাঁচা খাবো তখন আমরা নিজের অজান্তে অনেক জীবাণু খেয়ে ফেলবো।
কাঁচা ডিমে অনেক ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে যার ফলে যদি আমরা ডিম কাঁচা খেয়ে ফেলি তাহলে আমাদের পেট ফুলা এবং পেটে অস্বস্তি হতে পারে ।তাই আমাদের ডিম সিদ্ধ করে খেতে হবে । যার ফলে আমরা ডিমের ভিতরে থাকা ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে বেছে যাবো।
হাঁসের ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে লেখকের শেষকথা
হাঁসের ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনি ধারণা পেয়েছে। তার সাথে জানতে পেরেছেন হাঁসের ডিম কিভাবে সংরক্ষণ করবো এই সম্পর্কে। তাই আমার পরামর্শ এটা যে, যেহেতু হাঁসের ডিম আমাদের শরীরের প্রচুর পরিমাণ পুষ্টির যোগান দেয়। তাই আমাদের উচিত প্রতিদিন একটা করে হাঁসের ডিম খাওয়া।
তবে যাদের ডায়বেটিস এবং হাঁসের ডিমে এলার্জি আছে তারা অবশ্যই এটা এড়িয়ে চলুন।আমাদের আর্টিকেলটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করবেন। এরকম আরো আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি প্রতিনিয়ত ফলো করবেন। ধন্যবাদ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url